ভ্রমর

আচ্ছা বেশ। তাহলে একটা গল্প বলি আজ। তিন কড়ি দুঃখের গল্প। শান্ত, অথচ মাঝসমুদ্রের মত গভীর একখানা গল্প। গল্পের শেষ অবধি কেউ থেকোনা প্লীজ়, আবার কয়েকজন গল্পের মধ্যভাগ দিয়ে শুরু করো। কেউ লাস্ট লাইনটা পোড়ো, সেটাই অনেক। 

আসলে সম্পূর্ণ গল্প জানলে তুমি হয়ে যাবে অন্তর্যামী, আমি হয়তো চিচিং ফাঁক। ইন ফ্যাক্ট পুরো গল্প তো আমিও জানিনা, তাহলে আমি লিখছিটা কি? কে জানে। সময়ের দাম আছে। 

যখন যাওয়ার কথা মনে হবে, চলে যেও। 

অথবা তুমি হতে পারো আমার এ গল্প ভালো না লাগাতে পারা, ভালো না বাসতে পারা একজন মানুষ, যে শুরু হয়তো করেছিলো এই ভেবে যে অনেককিছু শেখা যাবে, হয়তো কিছু ভালো সময় একসাথে কাটানো যাবে। যে শুরু হয়তো করেছিলো এই ভেবে যে ঘরটা একরকম অথচ একবার তুমি যখন ভেতরে ঢুকলে দেখলে চুন রঙের বদলে আলকাত্রা। যা ভেবেছিলে তা মোটেই নেই। কেবল শুন্য নয়, একেবারে নেগেটিভ, যাকে বলে। নেতিবাচক। হতাশাবাদী। তোমার হয়তো মনে হয়েছিল একরকম, কিন্তু আমার লেখার অভ্যেস, বাঁচার কায়দা অথবা ভাবনার ভঙ্গি দেখে তোমারও মনে হল, মেবি ইটস্ টু মাচ ফর ইওর্সেল্ফ। তা মনে হওয়াটা যথেষ্ট বোধগম্য, এবং ভাগ্যবশত বা দুর্ভাগ্যবশত আমি একজন আক্কেলমন্ত ব্যক্তি হওয়ায় ক্ষোভ পুষে রাখিনা। পুষে রাখলেও অন্তত বাইরের লোকেরা বুঝতে পারেনা এই ডেভিলস্ ওয়ার্কশপে কি চলছে। আশ্চর্যজনক ভাবে আমার খালি মাথা অন্য ভাবে কাজ করে। কারণ আমায় জিজ্ঞেস করে লাভ নেই, উত্তর পাবে না। যাকগে সেটা এই মুহূর্তে বলাটা খুব উচিত হবে বলে আমার মনে হয় না তাই আমি এগিয়ে যাবো। তুমি (যার কথা একটু আগেই বললাম) হয়তো চেয়েছিলে আমায় বদলাতে, বদলাতে আমার লেখার ধরণ, ভাবনার ভঙ্গি এবং দৃষ্টিকটু পণ্যের ওপর আমার আকর্ষণ, আমার নির্দয় লোভ এবং মাত্রাহীন কামকাঞ্চন। বদলাতে চেয়েছিলে আমার চাহিদা, কেড়ে নিতে চেয়েছিলে যত অস্বীকৃতি, বিলিয়ে দিতে চেয়েছিলে আমার নিরর্থক জীবনে কয়েক হাজার লিটার রক্ত, যার প্রত্যেক এরিথ্রোসাইটে খোদাই করা উদ্দীপনা, যার প্লাসমার প্রত্যেক ফোঁটার শুধু একটাই হেতু - to drench me with love. এই যে শ্রেণীর কথা আমি এতক্ষন ধরে বলছি, তা অনুমান করাটা নিতান্তই সহজ। ভুল করে নিজেকে অন্তর্যামী ভেবে ফেললে বুঝি?

সুন্দর গল্পের একটা অতীব বিশ্রী আরম্ভ। 

আমার শয়তানের কারখানায় একটা জিনিস কবে এবং কে ঢুকিয়েছে আমি জানিনা, তবে যে ঢুকিয়েছে বেশ করেছে, ও আমি চাইনা সেই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে, যতদিন না আমার কোনো লোকসান ঘটছে। অপরদিকে এও সত্য যে আমার বানানো সাম্রাজ্য যদি একদিন ধ্বংসের মুখে চলেও যায়, I'd fail to acknowledge that the loss was due to my delusion. ভেতর ভেতরে যতই জানি হয়তো চাকা গড়াতে গড়াতে খুব বাজে একখান রূপ নেবে, হৃদমাঝরে এও জানি উইপোকা ধরে গেছে, albeit: it is point of no return

আমি কখনও মাঝারি কিংবা average হতে চাইনা। এবং এটা একটা অভ্যেসে এসে দাড়িয়েছে। আমি জানিনা লোকে কতটা নোটিস করে কিংবা না। আমি জানিনা কে জিনিসটাকে অন্য ভাবে নেয়। আমি পিছিয়ে কোথায় পরছি জানো? আমার যায় বা আসে না কে কি ভাবছে। বীতশ্রদ্ধতা জাঁকিয়ে বসেছে মনে এমন ভাবে যেন আমি এরমি ছিলাম সারাটা কাল। অথচ এসব আমি মুখেই বলছি, কারণ আদতে, আমার কিচ্ছু যায় বা আসেনা। At this point, I've no clue where I'm taking myself. In a dire state, in the most vulnerable and pitiful condition I've thrown myself in; breathing in thoughts of resurrection, in hope of being picked up someday. Just to be someone better or worse... anything but average. কেউ পিক আপ না করলে যেনো অন্ততপক্ষে একটু মাটি খুঁড়ে আমার লাশটা ফেলে দেয় তাতে। 

আমি অ্যাভারেজ হতে চাইনা! যতই দাগ লাগাও মেইন ক্যারেক্টার সিনড্রোমের, যতই দাগ লাগাও নার্সিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারের, যতই দাগ লাগাও প্রটাগনিস্ট ডিজ়ীজ়ের, আমার ল্যাক অফ এম্প্যাথি সীমিত আমায় অবধি, আমি সেই আগুনের তাপ তোমায় অবধি পৌঁছাতে দিইনা এবং তোমাকে সেটা অ্যাক্সেপ্ট্ করতে হবে! আমার ডেস্পারেশনের কারণ যাই হয়ে থাকুক না কেনো, তোমায় তার জন্যে কোনোদিন হেনস্থা হতে হয়নি! আমি চেয়েছিলাম শেষে এসে আমরাও হবো সেই আইডিয়াল যাকে দেখলে হাজার যুগলের লালা ঝরে, যেমন তোমার ঝরেছিল! 

আমার মধ্যে অনেক, অনেক, অনেক ত্রুটি। হাজারগন্ডা দোষ, বদভ্যাস, গো। না আমি কাউকে আজ অবধি আপন করতে পেরেছি, না কেউ আমাকে আপন করতে চেয়েছে। মাঝে যতটুকু যা হয়, তা অভিনয় মাত্র। আমার জীবনে বনলতা সেন, বেলা বোস বা রুবি রায় অনেকেই এসেছে। আমি অভিনয়টা যতই ভালো করিনা কেনো, বেশিদিন চালাতে পারিনা গো। এবারও আমি আমার মৃণালিনী খোয়ালাম। "I've reached a stage where I am incapable of human relationships". Is it? নাকি সেটাও আমার ভ্রম? অনেকের মতন আমিও মেইনস্ট্রিম ম্যাট্রিক্সের একটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র কণিকা? চলিত? কার দ্বারা তা নিজেরও জানা নেই।

আসলে, ব্যাপারটা গিলে নিয়েছি ঠিকই কিন্তু ওই, একটু হজম হতে দেরি হচ্ছে। 

তোমার ছোঁয়ায় ৪টে বছর হ্যাঁ? ভাবা যায়? তুমি অ্যাডলিসেন্ট থেকে অ্যাডাল্ট, মাঝে নিজের আর্থিক স্বতন্ত্রতা নিজের হাতে... আরো কত কি! অথচ ভাবতে গেলে রাত ফুরোবে কিন্তু নোটে গাছটি মুরবেনা যেদিন ককিলটা হঠাৎ কাকের বাসায় ডিম পেড়ে গেলো। কাক নিজের মতন করে মানুষ করলো ঠিক তাও বাজারে শোনা গেলো কি? না কাক নাকি একটা মা হওয়ার যোগ্যতাই রাখেনা! কেউ বুঝলো না, তাদের দুজনের কাল্চারটাই আলাদা! এদিকে কোকিলের নিজের ঘর নেই, সারাটা জীবন উড়ে উড়ে বেড়ায়, কোনো সিকিউরিটি নেই জীবনে, ইন ফ্যাক্ট অন্যদের চড়িয়ে নিজের জীবন চালায়। This is what life means to a fuckin cuckoo.

এবার আমি আসি। বেশ রাত হয়েছে। আবার পরের দিন, তুমি থাকবে তো? নাকি আমার মত, তুমিও চিচিং ফাঁক?


একদিন কা কা করে ডেকে বেড়িয়েছিলাম সারাবেলা
একদিন তাড়া করেছিলাম স্বয়ং কাকতাড়ুয়াকেই


*এই গল্প আমার কোল্ড সেন্ট্রিফ্যুজে এখন কিছুদিন ঘুরবে। অন্তত যতদিন না আমি এই সলিউশন থেকে কোনো পেলেট বের করতে পারছি। যতদিননা আমার মনে হচ্ছে গল্পটাকে বাজারে ছাড়া অনুচিত। এবার আমার সেন্ট্রিফ্যুজ বাকি কাজটা করবে, রসটা নিংরানোর।

Popular Posts